মোট সদস্য সংখ্যা ৫০০

ভৈরব কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি অতিপরিচিত উপজেলা। ঢাকাসিলেট মহাসড়কের পাশে মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিতি প্রাচীন ব্যবসাকেন্দ্র। কালের বিবর্তনে বিভিন্ন ব্যবসায়িক টানা পোড়নের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর অর্থনীতির উন্নয়নের একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে আসে একটি উদীয়মান খাতভৈরব পাদুকা শিল্প। এই খাত বর্তমানে ভৈরবকে সম্ভাবনার দিকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। নীরবে বেড়ে উঠা এই খাত ভৈরব সহ গোটা দেশের জন্যই একটি অপার ব্যবসায়িক সম্ভাবনার সুত্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে।

ভৈরবে এ পাদুকা শিল্পের বিকাশের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ এক সংগ্রামের ইতিহাস। ব্রিটিশ শাসনামলে কলকাতায় জুতা শিল্পের প্রসার ঘটতে শুরু করলে ১৯৩০ সালের দিকে ভৈরব উপজেলার শিমুল কান্দি, গজারিয়া, মানিকদি, কালিকা প্রসাদসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু লোক জুতা তৈরির কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ নেয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর এসব শ্রমিক দেশে ফিরে পুরান ঢাকা, মিরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার অবাঙালীদের জুতা তৈরির কারখানায় কাজ শুরু করে। তারা সেখান থেকে দক্ষতা অর্জন করে পরবর্তী সময়ে ভৈরবে নিজ গ্রামে ধীরে ধীরে গড়ে তোলে জুতার কারখানা। তবে প্রকৃত অর্থে এখানে এ শিল্পের বিকাশ ঘটে নব্বইয়ের দশক থেকে।

বর্তমানে ভৈরব পৌর এলাকার কমলপুর, জামালপুর, হাজী ফুল মিয়ার পাদুকা মার্কেট, শম্ভুপুরের সালাম মার্কেটসহ মধ্যেরচর, চণ্ডীবেড়, কমলপুর বাসস্ট্যান্ড, সাদুতলাঘাট, শিমুলকান্দি, বাঁশবাড়ী, গজারিয়া, মানিকদি, কালিকাপ্রসাদসহ কমপক্ষে ২০ টি গ্রামে এসব কারখানা গড়ে উঠেছে। ভৈরবে পাদুকাশিল্পের সাফল্য দেখে কুলিয়ারচর, বাজিতপুর এবং বেলাব উপজেলাতেও পাদুকাশিল্প গড়ে উঠছে ও দিন দিন বিকশিতও হচ্ছে। কর্মসংস্থানের যোগানের উদ্দেশ্যে লক্ষাধিক শ্রমিক এ শিল্পে জড়িত হয়েছে। এর সাথে রয়েছে জুতার বাক্স তৈরির বেশকিছু কারখানাও। ভৈরবে উৎপাদিত জুতা আকর্ষণীয় ডিজাইন, তুলনামূলক কম দাম এবং গুণগত মানের কারণে সারা দেশে এখন বেশ জনপ্রিয়। ব্যবসায়ীদের কাছেও বাণিজ্যিকভাবে ভৈরবের জুতা ব্যাপকভাবে সমাদৃত। এ শিল্পের ক্রমবর্ধমান প্রসার ঘটায় স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থানেরও যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

0
সদস্য
0
এলাকা

See How It Works

Discover how can you help you find everything you want.