ভৈরবে দিনে তৈরি হয় আনুমানিক ১ থেকে ২ লাখ জোড়া পাদুকা

আগস্ট 27, 2023

১৯৮৯ সালে ভৈরবে পাদুকাশিল্পের যাত্রা শুরু। এটি দেশের সবচেয়ে বড় পাদুকা প্রস্তুতকারক এলাকা, যা আশপাশে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়েছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর আর কুলিয়ারচর উপজেলাতেও বেশ কিছু কারখানা গড়ে উঠেছে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের পাদুকাশিল্পের রূপান্তরটা খুব কাছ থেকেই দেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দা কামাল মিয়া। তিনি নিজেও অবশ্য ফুটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের মালিক। সেখানে এখন সারি সারি পাদুকা কারখানা। আগে হাতে তৈরি করা হতো পাদুকা। এখন মালিকেরা ধীরে ধীরে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে পাদুকা তৈরির দিকে ঝুঁকছেন। তবে করোনা মহামারির সময়ে প্রথমবারের মতো ভৈরবের পাদুকা জাপানে রপ্তানি হওয়াটাই সবচেয়ে বিস্ময়কর লেগেছে কামাল মিয়া কাছে।

ভৈরবের দুর্জয় মোড় থেকে কিশোরগঞ্জে যাওয়ার পথে প্রায় ২০ কিলোমিটার জুরে গড়ে তোলা হয়েছে শতভাগ রপ্তানিমুখী কারখানা।

ভৈরবে পাদুকাশিল্পের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। এটি দেশের সবচেয়ে বড় পাদুকা প্রস্তুতকারক এলাকা। প্রথম কারখানা স্থাপন করা হয় ভৈরব উপজেলা পরিষদ এলাকায়। কারখানার সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন আশপাশের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়েছে। এমনকি ভৈরব ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর আর কুলিয়ারচর উপজেলাতেও বেশ কিছু পাদুকা কারখানা গড়ে উঠেছে।

পাদুকাশিল্পকে কেন্দ্র করে ভৈরবে জোরেশোরে নানা ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে, যা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। যেমন ব্যাংক ও আর্থিক সেবার পরিধি বাড়ছে, নতুন নতুন হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট গড়ে উঠছে। ফলে জমির দাম বাড়ছে হু হু করে। এক বছর আগেও যেখানে ১ শতাংশ জমির দাম ছিল ১০ লাখ টাকা, সেখানে তা বেড়ে এখন ৪০ লাখ টাকায় উঠেছে। কারখানা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যেও নতুন বাসা বানিয়ে ভাড়া দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এ ছাড়া পাদুকাশিল্পের কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে গড়ে উঠেছে দুটি বিনোদনকেন্দ্র, যেখানে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটছে।

 

পাদুকাশিল্পকে ঘিরে ভৈরব এলাকায় জুতা রাখার বাক্সসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালসের (উপকরণ) অন্তত ৩০০টি দোকান গড়ে উঠছে। এ ছাড়া পাদুকার নকশা তৈরির কারখানাও রয়েছে। পাদুকার পাইকারি দোকানও বাড়ছে দিন দিন। সব মিলিয়ে যেন হুলুস্থুল ব্যাপার।

ভৈরবে পাদুকাশিল্পের এই রূপান্তর হয়েছে স্থানীয়দের নিজস্ব উদ্যোগে। পাদুকাশিল্পের সবচেয়ে বড় সমস্যা কাঁচামালের দামের ঊর্ধ্বগতি। পাদুকা তৈরির কাঁচামাল আমদানি করতে হয় চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। কিন্তু কাঁচামাল আমদানিতে ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয় সরকারকে।
ভৈরব পাদুকা শিল্প মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার সুপারিশ ছিল অনেক আগে থেকে এবং সেটা করা হয়, যেখানে সব উদ্যোক্তা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য ও তথ্য বিনা মূল্যে প্রদর্শন করতে পারছে।

এদিকে দেশের সর্ববৃহৎ পাদুকা প্রস্তুতকারী এলাকা ভৈরবে মোট কতটি পাদুকা কারখানা আছে এবং সেখানে কত মানুষ কাজ করেন, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সমীক্ষা হয়নি। সেখানকার কারখানাগুলোয় উৎপাদিত পণ্যের বাজারমূল্য কত কিংবা বার্ষিক লেনদেনেরও সঠিক হিসাব আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। কম্পিউটার ব্যবহার করে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের কোনো ধারণা নেই।

4 Comments

  1. জনি হাসান

    অক্টোবর 12, 2023

    ভৈরবে অনেক ছোট বড় জুতার কারখানা আছে।

  2. মনির

    অক্টোবর 12, 2023

    ভৈরব পাদুকা শিল্প মালিক সমবায় সমিতি আছে। তা আজকেই জানলাম

  3. Akash mollik

    অক্টোবর 12, 2023

    উপকারী পোস্ট

  4. আসাদ ইসলাম

    অক্টোবর 12, 2023

    ভৈরবের জুতা বিদেশে রপ্তানি হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published.